ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা ২০২৫
ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা ২০২৫ সম্পর্কে আমারা আজকে জানব। ইউরোপ একটি বৈচিত্র্যময় মহাদেশ যেখানে আধুনিক সভ্যতার কেন্দ্রবিন্দু এবং অতুলনীয় সৌন্দর্যের মিশ্রণ বিদ্যমান। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এক বিশাল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তবে ইউরোপের দেশগুলোকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায় – সেনজেন ভুক্ত দেশ এবং নন সেনজেন ভুক্ত দেশ। আজ আমরা আলোচনা করব নন সেনজেন ভুক্ত দেশগুলোর তালিকা এবং এদের সম্পর্কে বিস্তারিত।
সেনজেন এবং নন সেনজেন কী?
সেনজেন এলাকা:
সেনজেন এলাকা বলতে ইউরোপের এমন দেশগুলোকে বোঝানো হয়, যারা একে অপরের মধ্যে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই ভ্রমণের অনুমতি দেয়। সেনজেন চুক্তি ১৯৮৫ সালে লুক্সেমবার্গের একটি ছোট গ্রামে স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বিনা বাধায় যাতায়াতের ব্যবস্থা করা। বর্তমানে সেনজেন ভুক্ত দেশগুলোতে একটি মাত্র ভিসার মাধ্যমে ২৭টি দেশ ভ্রমণ করা যায়।
নন সেনজেন এলাকা:
নন সেনজেন দেশগুলো হল এমন দেশ, যারা সেনজেন চুক্তির অংশ নয়। এর ফলে, এসব দেশে প্রবেশ করতে হলে আলাদা ভিসার প্রয়োজন হয়। নন সেনজেন দেশগুলোও উন্নত এবং আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে পরিচিত।
ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা
নন সেনজেন ভুক্ত দেশগুলো তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। ২০২৪ সালের হালনাগাদ তালিকা অনুযায়ী, ইউরোপে নন সেনজেন ভুক্ত ২৩টি দেশ রয়েছে।
১. আলবেনিয়া
২. কসোভো
৩. ইউক্রেন
৪. উত্তর মেসিডোনিয়া
৫. যুক্তরাজ্য
৬. লিচটেনস্টাইন
৭. মলদোভা
৮. আন্দোরা
৯. আর্মেনিয়া
১০. রাশিয়া
১১. সার্বিয়া
১২. বেলারুশ
১৩. বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা
১৪. মন্টেনেগ্রো
১৫. সুইজারল্যান্ড
১৬. ভ্যাটিকান সিটি
১৭. জর্জিয়া
১৮. মোনাকো
১৯. সান ম্যারিনো
২০. তুরস্ক
২১. আইসল্যান্ড
২২. নরওয়ে
২৩. স্লোভাকিয়া
নন সেনজেন দেশ ভ্রমণের সুবিধা ও অসুবিধা
সুবিধা:
- বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা: প্রতিটি নন সেনজেন দেশ তার নিজস্ব সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপস্থাপন করে।
- কম ভ্রমণজনিত বিধিনিষেধ: কিছু নন সেনজেন দেশে ভ্রমণের জন্য তুলনামূলকভাবে সহজ ভিসা প্রক্রিয়া রয়েছে।
- পর্যটনের সুযোগ: নন সেনজেন দেশগুলো বিভিন্ন ধরণের পর্যটনের জন্য বিখ্যাত, যেমন – ঐতিহাসিক স্থাপত্য, পর্বত ভ্রমণ এবং স্থানীয় সংস্কৃতি।
অসুবিধা:
- বিভিন্ন ভিসার প্রয়োজন: এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হলে আলাদা ভিসা লাগতে পারে।
- সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ: সেনজেন ভুক্ত দেশগুলোর মতো বিনা বাধায় চলাচলের সুযোগ নেই।
- নিয়মের ভিন্নতা: প্রতিটি দেশের নিজস্ব অভিবাসন এবং সীমান্ত নীতিমালা রয়েছে, যা অনেক সময় জটিল হতে পারে।
নন সেনজেন দেশগুলোর বৈশিষ্ট্য
- যুক্তরাজ্য: ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে যুক্তরাজ্য নন সেনজেন দেশ হিসেবে গণ্য হয়। এখানে লন্ডন, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসের মতো জায়গাগুলো জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য।
- সুইজারল্যান্ড: সেনজেন চুক্তির অংশ না হলেও সুইজারল্যান্ড ইউরোপের অন্যতম ধনী এবং সুন্দর দেশ। আল্পস পর্বত এবং লুসার্ন লেক সুইজারল্যান্ডের মূল আকর্ষণ।
- তুরস্ক: ইতিহাস এবং আধুনিকতার মিশেলে গঠিত একটি দেশ। ইস্তাম্বুল এবং ক্যাপাডোসিয়া তুরস্কের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র।
সেনজেন ও নন সেনজেন দেশের মধ্যে প্রধান পার্থক্য
বিষয়ে | সেনজেন দেশ | নন সেনজেন দেশ |
---|---|---|
ভিসা প্রয়োজন | একটি ভিসায় ২৭টি দেশ ভ্রমণ | প্রতিটি দেশের জন্য আলাদা ভিসা |
সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ | সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ নেই | সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে |
পর্যটন সুযোগ | অভিন্ন নীতিমালা | দেশের নিজস্ব নিয়ম |
শেষ কথা
ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশগুলো তাদের নিজস্ব অনন্য বৈশিষ্ট্যের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। ভ্রমণকারীদের জন্য এসব দেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা প্রদান করে। আপনি যদি ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশগুলো ভ্রমণ করার পরিকল্পনা করেন, তবে আগে থেকেই ভিসা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিশ্চিত করুন। এটি আপনার ভ্রমণকে আরও সহজ এবং আনন্দদায়ক করবে।